১৩ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত, রুদ্ধশ্বাস টি-২০ ফাইনালে ৭ রানে জয়ী রোহিতরা

অবশেষে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারালেন রোহিতেরা। ১৩ বছর পরে আবার ভারতের ঝুলিতে এল বিশ্বকাপ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারালেন রোহিতেরা। প্রথমে ব্যাট করে ভারত করে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান। জবাবে প্রোটিয়াদের ইনিংস শেষ হল ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ১৭ বছর পর টি২০ বিশ্বকাপ ভারতের ঘরে এল। এর আগে ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল ২০০৭ সালে, মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে।

শুরুতেই ঘটেছিল বিপর্যয়। ২৩ রানের মাথায় দুটো উইকেট পড়ে যায়। প্রথমে অধিনায়ক রোহিত শর্মা (৫ বলে ৯ রান), দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে। ওই ওভারেরই শেষ বলে আউট হন ঋষভ পন্থ, কোনো রান না করেই। দু’জনকে তুলে নিলেন কেশব মহারাজ। রোহিত ক্যাচ দিলেন হাইনরিখ ক্লাসেনকে, আর ঋষভ উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কক-কে। এর পর দলের স্কোরের সঙ্গে ১১ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সূর্যকুমার যাদব। ৪ বলে ৩ রান করে কাগিসো রাবাদার বলে ক্লাসেনকে ক্যাচ দেন তিনি।৩ উইকেটে ৩৪।

এখান থেকেই দলের হাল ধরলেন বিরাট কোহলি এবং অক্ষর পটেল। দু’জনের জুটিতে বেশ দ্রুত গতিতে রান উঠছিল। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৭২ রান। দুর্ভাগ্য অক্ষর পটেলের। ৩ রানের জন্য অর্ধশত রান থেকে বঞ্চিত হন তিনি। ৩১ বলে ৪৭ রান করে তিনি রান আউট হন। কোহলির সঙ্গী হন শিবম দুবে। ইতিমধ্যে কোহলি তাঁর অর্ধশত রান পূর্ণ করেন। কোহলি-দুবে পঞ্চম উইকেটে যোগ করেন ৫৭ রান। ৫৯ বলে ৭৬ রান করে দলের ১৬৩ রানের মাথায় আউট হন বিরাট কোহলি। মার্কো ইয়ানসেনের বলে ক্লাসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কোহলি।তখনও ভারতের হাতে ছিল ৭ বল। এই ৭ বলে ভারত যোগ করল ১৩ রান। শিবম দুবে ১৬ বলে ২৭ রান করে আনরিখ নর্তজের বলে ডেভিড মিলারকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। রবীন্দ্র জাদেজাও (২ বলে ২ রান) নর্তজের শিকার হন। হার্দিক পাণ্ড্য ২ বলে ৫ রান করে নট আউট থাকেন। ২০ ওভারে ভারত তোলে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান, টি২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে এক ইনিংসে এত রান আগে কখনও ওঠেনি।

জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছোতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় সাউথ আফ্রিকা। ৭ রানের মাথায় দলের প্রথম উইকেট পড়ে। আউট হয়ে যান রিজা হেনড্রিক্স (৫ বলে ৪ রান)। তাঁকে বোল্ড করেন জসপ্রীত বুমরাহ। আরও ৫ রান যোগ হতেই আবার পতন। এবার প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আইডেন মার্করাম (৫ বলে ৪ রান)। তাঁকে তুলে নেন অর্শদীপ সিং। উইকেটকিপার ঋষভকে ক্যাচ দেন মার্করাম।পরিস্থিতি সামাল দেন কুইন্টন ডি কক এবং ট্রিস্টান স্টুব্‌স। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৫৮ রান। ২১ বলে ৩১ রান করে দলের ৭০ রানের মাথায় অক্ষর পটেলের বলে বোল্ড হন স্টুব্‌স। ডি ককের সঙ্গী হন হাইনরিখ ক্লাসেন। দু’ জনে চতুর্থ উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৩৬ রান।

দলের ১০৬ রানের মাথায় ডি কককে তুলে নেন অর্শদীপ সিং। ক্রিজে এলেন ডেভিড মিলার।হাইনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন ততক্ষণ ভারতের সমর্থকদের মনে আতঙ্ক তৈরি করে দিয়েছিলেন। দু’জনে রান পৌঁছে দিলেন ১৫১-য়, ১৬.২ ওভারে। হার্দিক পাণ্ড্যর বলে ঋষভকে ক্যাচ দিয়ে ২৭ বলে ৫২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন ক্লাসেন।জয়ের জন্য তখন আর দরকার ২৬ রান, হাতে ২২ বল। টি২০ ক্রিকেটে এই টার্গেট মোটেই কঠিন নয়, বিশেষ করে যতক্ষণ ডেভিড মিলার উইকেটে আছেন। বেশ দ্রুত গতিতেই রান উঠছিল। ১৭ ওভারের শেষে রান দাঁড়াল ৫ উইকেটে ১৫৫। ১৮তম ওভারটি করতে এলেন বুমরাহ। চতুর্থ বলে মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করলেন। আর ওই ওভারে দিলেন মাত্র ২ রান। পরের ওভার করলেন অর্শদীপ সিং, দিলেন মাত্র ৫ রান। আর বাকি ৬ বল, রান করতে হবে ১৬ রান। বেশ কঠিন কাজ। তবু মিলার রয়েছেন ক্রিজে। ভারতীয়রা চিন্তিত। আর মিলারের তো ছয় মারা ছাড়া উপায় নেই। হার্দিক পাণ্ড্যর প্রথম বলেই তুলে মার। এবং কেল্লা ফতে করলেন সূর্যকুমার যাদব। ৪ বল পরে হার্দিক তুলে নিলেন রাবাদাকেও।

Related posts

বিশ্বকাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রোহিত-রাহুলরা

রোহিতদের জয়জয়কার, বিশ্বজয়ী ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা সংসদের

দেশকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়েই টি-২০ থেকে অবসর বিরাট-রোহিতের