টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠল ভারত। আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭১ তুলেছিল ভারত। জবাবে ইংল্যান্ড থেমে গেল ১০৩ রানে। ভারত জিতল ৬৮ রানে। শনিবারের ফাইনাল ম্যাচে রোহিত শর্মাদের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩ বছর পর আবার একটি বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ ভারতের সামনে।
৪০ রানের মধ্যে ২টি উইকেট পড়ার পর পরিস্থিতি সামাল দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং সূর্যকুমার যাদব। দলের ১৯ রানের মাথায় ৯ রান করে রিস টপলের বলে বোল্ড হন বিরাট কোহলি। এর পর ঋষভ পন্থও বেশিক্ষণ টিকলেন না। মাত্র ৪ রান করে স্যাম কুরানের বলে জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন। দলের রান তখন ৪০।
এদিকে রোহিত ব্যাটিং-এ ঝড় তোলেন। তাঁর সঙ্গী সূর্যকুমার যাদবও একটু একটু করে এগোতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর আবার বৃষ্টি নামে। আবার সোয়া ঘণ্টা মতো সময় নষ্ট হয়। খেলা ফের শুরু হতেই শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন রোহিত আর সূর্য। ত্রয়োদশ ওভারের তৃতীয় বলে স্যাম কুরানকে ছয় মেরে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন রোহিত। ত্রয়োদশ ওভারের শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১১০। রোহিত ৫৭ এবং সূর্যকুমার ৪১ রানে নট আউট থাকেন। কিন্তু পরের ওভারেই এল ধাক্কা। ৩৯ বলে ৫৭ রান করে আদিল রশিদের বলে বোল্ড হন রোহিত। রোহিতের ৫৭ রানে ছিল ২টো ছয় এবং ৬টা চার। সূর্যকুমারের সঙ্গী হন হার্দিক পাণ্ড্য।
মাত্র ৩ রানের জন্য অর্ধশত রান হাতছাড়া হল সূর্যকুমারের। ৩৬ বলে ৪৭ রান করে জোফরা আর্চারের বলে একেবারে সীমানার ধারে বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সূর্যকুমার। ভারতের রান তখন ৪ উইকেটে ১২৪ রান। ক্রিজে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। হাতে তখন ৪.২ ওভার। ভালো খেলছিলেন হার্দিক। খ্রিস জর্ডানকে পর পর দুটো ছয় মারলেন। কিন্তু তৃতীয় বলেই সীমানার ধারে স্যাম কুরানকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন হার্দিক। নামলেন শিবম দুবে। পরের বলেই জোস বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নমুখো হলেন তিনি। ভারত পর পর ২টো উইকেট হারাল। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে জর্ডানের বলে ফিল সল্টকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন অক্ষর পটেল। ইনিংসের শেষ বলে অর্শদীপ সিং ১ রান নিলেন। ভারতের ইনিংস শেষ হল ১৭১ রানে। জাদেজা নট আউট থাকলেন ৯ বলে ১৭ রান করে। ভারতের ৭টি উইকেট ভাগ করে নিলেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। তাঁরই মধ্যে ৩৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিলেন খ্রিস জর্ডান।
ইংল্যান্ড ব্যাটাররা শুরুটা করেছিলেন আগ্রাসী ভঙ্গিতেই। তৃতীয় ওভারে আরশদীপ সিংহকে তিনটি চার মেরে ইংল্যান্ডের মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই বাটলার-কাঁটা উপড়ে নিলেন অক্ষর। প্রথম বলেই কাট করতে গিয়ে পন্থের হাতে ক্যাচ দিলেন বাটলার। পরের ওভারে বুমরা তুলে নিলেন সল্টকে। ষষ্ঠ ওভারে সেই অক্ষরই তুলে নেন জনি বেয়ারস্টো। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বেকায়দায় পড়ে যায় ইংল্যান্ড।
অক্ষর সেখানেই থামতে চাননি। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে তিনি তুলে নেন মইন আলিকে। ইংরেজ অলরাউন্ডারের প্যাডে বল লাগার পর কেন তিনি এগিয়ে এলেন জানা নেই। ক্রিজ়ে ফেরার আগেই পন্থ বল তুলে এক হাতে উইকেট ভেঙে দেন। স্পিনারদের উৎসবে কুলদীপ যাদবও বাদ যাননি। তিনি নবম ওভারের প্রথম বলে তুলে নেন স্যাম কারেনকে। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ইংরেজদের টলোমলো অবস্থা।
ইংরেজদের একমাত্র আশা বলতে ছিলেন হ্যারি ব্রুক। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলে কুলদীপ যাদব তাঁকে তুলে নিতেই খেল খতম। বাকি ব্যাটারদের সাজঘরে ফেরাতে বেশি ঘাম ঝরাতে হয়নি ভারতকে। ভারতের হয়ে অক্ষরের পাশাপাশি তিনটি উইকেট নিলেন কুলদীপ। দু’টি উইকেট যশপ্রীত বুমরার।