মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর দখল উচ্ছেদ অভিযান, পদ্ধতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ বিজেপি-র

গড়িয়াহাট। ছবি: রাজীব বসু

কলকাতা : গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমের চেয়ারম্যান, মেয়র ও সরকারি আধিকারিকদের উপস্থিতিতে নবান্নে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে বেআইনি দখল-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমক খেয়ে মঙ্গলবারের পর বুধবারও তৎপর রাজ্যের পুর প্রশাসনগুলি। অন্য দিকে, এই দখলমুক্তি অভিযানের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি নিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে তোপ দেগেছে বিজেপি।

জবরদখল মুক্ত করতে মঙ্গলবার কলকাতা-সহ ৭ জায়গায় নামল বুলডোজার । বেহালা, নিউটাউন, আলিপুর, অ্যাপোলো হাসপাতালের সামনে নামল বুলডোজার। হাওড়া, সিউড়ি, আলিপুরদুয়ারেও বুলডোজার নিয়ে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে অভিযান। কলকাতা থেকে জেলা, ফুটপাথ জবরদখল মুক্ত করতে অভিযান। 

এ ছাড়াও বেআইনি দখল নিয়ে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। মুখমন্ত্রীর এই নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেলে দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারে এলাকা জুড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে দখলদারদের সতর্ক করা হয়। তাঁদের সরকারি জমি খালি করে দোকানপাট অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা না হলে প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁদের  উচ্ছেদ করা হবে বলে জানানো হয়। নতুন দায়িত্ব নিয়ে শহর জুড়ে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানে নামার ঘোষণা করলেন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান কবি দত্ত।  

বীরভূমের সিউড়ি শহর দখল মুক্ত করা শুরু করেছে সিউড়ি পুরসভা। বুধবার পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্য়ায়-সহ পুরসভার কর্মী এবং পুলিশ জেসিবি নিয়ে শহর দখল মুক্ত করতে নেমেছে। বিষ্ণুপুর পুরসভার তরফে বুধবার বেআইনি ‘দখলদার’ উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়। পুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী লালবাঁধের পাড় দখল করে গজিয়ে ওঠা একের পর এক দোকানের মালিককে জমি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্দেশ পালন না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। তারকেশ্বরের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে বুধবার পুলিশি অভিযান চলে। অভিযানে শামিল হয়েছিলেন হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায়, সিআই তারকেশ্বর প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়, তারকেশ্বর থানার ওসি-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক। বেআইনি ‘দখলদার’দের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় আলিপুরদুয়ার পুর প্রশাসনও। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকান এবং অবৈধ নির্মাণ।

অন্য দিকে, সরকারের এই সিদ্ধান্তের তুলোধনা করতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধীরা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেই দিয়েছেন, প্রয়োজনে তিনি বুলডোজারের সামনে গিয়ে দাঁড়াবেন। রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদে নামবে বিজেপি। ‘দখলদার’ উচ্ছেদ করতে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা ‘অমানবিক’ বলেও মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। তিনি জানিয়েছেন, তিনি বা তাঁর দল বেআইনি ভাবে সরকারি জমি অধিগ্রহণের পক্ষে নেই। কিন্তু রাজ্যের সর্বত্র নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কাজ করতে হবে। এর জন্য আগে রাজ্য সরকারকে এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) তৈরি করতে হবে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

Related posts

সমাজকর্মী মেধা পাটকরকে ৫ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের

রাহুল গান্ধীর ‘হিন্দু’ মন্তব্যে উত্তাল লোকসভা

চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তারকেশ্বরে