প্রথম পাতা প্রবন্ধ বাংলা ও বাঙালীর আর এক প্রাণের আরামঃ ” কাজী নজরুল ইসলাম

বাংলা ও বাঙালীর আর এক প্রাণের আরামঃ ” কাজী নজরুল ইসলাম

92 views
A+A-
Reset

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

বাঙালির শৈশব থেকে পরিণত বয়স এবং তারপরও জীবনের সর্বক্ষেত্রে, ঘরে বাইরে,সংসারে-সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি কাজী নজরুল ইসলাম স্বমহিমায় বিরাজ করেন।

সেই কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন আগামী ১১ই জৈষ্ঠ্য,ইংরেজির ২৬শে মে। বর্ধমান জেলার চুরুলিয়াতে কাজী নজরুলের জন্ম হয় খুব গরীব পরিবারে। অল্প বয়সেই বাবা মারা যায়, খুব দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই নজরুল ইসলামের শৈশব, কৈশোর কেটেছিল। তারপর তিনি ১৬ বছর বয়সে যুদ্ধের সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত হন। তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের শেষে তিনি করাচী থেকে চলে আসেন কলকাতার তালতলা, কলেজষ্ট্রীট অঞ্চলে। এখানেই প্রথমে তালতলা লেনে, পরে ৩২ নং দিলখুসা স্ট্রিটের একটি মেসবাড়িতে সমবয়সী এবং প্রিয়বন্ধু মুজফফর আহমেদের সাথে থাকতেন।

ছোটবেলা থেকেই তাঁর কবিতা লেখা,গান গাওয়া, বাঁশি বাজানো,নাটক করা,ইত্যাদির প্রতি ঝোঁক ছিল খুব।

পরবর্তী কালে কলকাতায় থাকাকালীন তাঁর এই প্রতিভার বিস্তার আরও বহু ধারায় বিস্তৃত হয়েছিল।
তিনি পরবর্তী সময়ে তাঁর কবিতা এবং গানে এতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন, যে স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর একজন গুণমুগ্ধ হয়ে ওঠেন। পরে দুজনের মধ্যে পিতা পুত্রের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। যে বন্ধন ছিল সারাজীবন।
১৯৪১ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের মহাপ্রয়ানের এবং সেই মহাপ্রয়ানের অন্তিমযাত্রার ধারাবিবরণী আকাশবাণী কলকাতার রেডিওতে কাজী নজরুল ইসলামের কণ্ঠে প্রচারিত হয়েছিল।তার সাথে ছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
নজরুল তখন রেডিওতে যুক্ত ছিলেন।

১৯৪২ সালে এক সন্ধ্যায় রেডিওতে কাজ করতে করতেই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কথা বলার সমস্ত ক্ষমতা চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেলেন। সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য….।

এক নীরব পাথরের প্রতিমার মতো শুধু বসে থাকতেন তাঁর কলকাতার ক্রিস্টোফার রোডের বাড়িতে। তাঁরই গানের ভাষায়.বলা যায়….. “ফুলেরও জলসায় নীরব কেন কবি…”।

তাঁর দুটিচোখ দিয়ে শুধু অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়ে, আর তিনি শুধু ফ্যালফ্যাল্ করে তাকিয়ে থাকেন এক উদাস শূন্য দৃষ্টিতে কোনো এক সুদুরের পানে যেন।

তাঁর লেখা কবিতা,গান বাংলা ও বাঙালীর ঘরে ঘরে গত শতকের দুই-এর দশক থেকে আজও বহমান পরম্পরা ঐতিহ্য-এর মতো বিরাজিত,শ্রদ্ধায় সমাদৃত।

১৯৭৬ সালে তিনি শেষ মহা অন্তিমযাত্রায় চলে যান সেই অজানায়,যেখান থেকে কেউ কোনো দিন আর ফিরে আসে না।

কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনে তাঁর প্রতি রইল বাঙলা ও বাঙালীর ভালোবাসা,শ্রদ্ধা এবং বিনম্র প্রণাম।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সম্পাদকের পছন্দ

টাটকা খবর

©2023 newsonly24. All rights reserved.