নয়াদিল্লি: বুথ ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাসকে সত্যি করে পঞ্জাবে সরকার গড়তে চলেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। ‘ঝাড়ু’-র ঝড়ে কার্যত বেসামাল কংগ্রেস, বিজেপি ও আকালি দল। মোট ১১৭টি আসনে অর্ধেকের বেশি পেয়ে সরকার গডতে চলছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল।
সকালে থেকে দলের জয়ের ট্রেন্ড লক্ষ করার পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ প্রার্থী ভগবন্ত মান সোজা চলে গিয়েছেন সংগুরুর একটি গুরদ্বারে। সেখানে গিয়ে তিনি প্রার্থনা করেছেন পঞ্জাবের সোনালি ভবিষ্যতের জন্য। সেই ছবি তিনি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেছেন। অর্থাৎ তিনি তখনই ধরে নিয়েছেন সরকার গড়তে চলেছে আপ। সিন্ধান্তে বড় কোনও বদল না হলে তিনি হবেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে মুখ করেই ভোটে লড়েছে আপ।
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিতে একটি নখদন্তহীন সরকার চালাচ্ছেন। পুলিশ তাঁর হাতে নেই। সেখানে কৌতুক শিল্পী ভগবত মান একটি রাজ্য চালিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন, তা কি মেনে নেবেন দলের সুপ্রিমো। কারণ নিন্দুকেরা বলেন, তাঁর ‘ইগোর সমস্যা রয়েছে। ওই ইগোর কারণে তাঁর অনেক গুরত্বপূর্ণ সহকর্মী দল ছেড়েছেন। এই ক্ষেত্রে বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নেবেন না তিনি।
কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, না মানলেও উপায় নেই। কারণ রাজ্যের তখতে কোনও অপঞ্জাবি মুখ্যমন্ত্রীকে মেনে নেবেন না পঞ্জাববাসী। এই অবস্থায় দাড়িয়ে ভগবত মানকে মুখ্যমন্ত্রী করা ছড়া উপায় নেই।
প্রশ্ন হল কোন মন্ত্র বলে জয় পেল আপ? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে এই জয়ে। বিজেপি যে হারবে তা স্পষ্টই ছিল। কিন্তু কংগ্রেসকেও ফের বেছে নিলেন না পঞ্জাববাসী। তাঁর কারণ কংগ্রেসের অন্তর্কোন্দল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংয়ের দল ছেড়ে দল তৈরি এবং পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রীর চান্নীর সঙ্গে সিধুর বিরোধ। ভোটে আগে এই সব কিছুই কংগ্রেসের রেটিং কমিয়েছে। উল্টে দিকে কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্রে করে রেটিং বড়েছে আপের। দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে দিল্লি সরকার যে ভাবে সহানুভূতি নিয়ে থেকেছে তা তাদের মন কেড়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে ইভিএমে।
এই প্রথম একটি পূর্ণ রাজ্যে ক্ষমতা পাচ্ছে আপ। ২০২৪-এর আগে সরকার চালানোয় যদি তারা নিষ্ঠা এবং নিপুনতা দেখাতে পারে, তবে লোকসভা ভোটে তার ফল পাবে তারা।